
বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে বুড়িগঙ্গায় পদযাত্রা
প্রতিবেদক: মোঃ আনোয়ার হোসেন
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ আজ নদী বিপর্যয়ের মুখে। একসময় হিমালয় থেকে নেমে আসা অসংখ্য নদ-নদীর প্রবাহে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ গড়ে উঠেছিল। সেই নদীগুলো মানুষের জীবন-জীবিকা, কৃষি ও অর্থনীতির মূল ভরসা হলেও বর্তমানে আড়াই শতাধিক নদী বিলীন হয়ে গেছে, অনেক নদী অস্তিত্ব সংকটে।

এ প্রেক্ষাপটে বিশ্ব নদী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে “নদীর জন্য পদযাত্রা” অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, আমরা দূর্বার, নদী যোদ্ধা বাংলাদেশ ও স্বাধীন বাংলাদেশ জনতা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ পদযাত্রা নয়াগাঁও থেকে শুরু হয়ে খোলামোড়া ঘাটে গিয়ে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জি.এম রোস্তম খান, নদী যোদ্ধা বাংলাদেশের সভাপতি মোঃ শাজাহান ও সাধারণ সম্পাদক আবু আল বাশার, আমরা দূর্বার সভাপতি আব্দুস সালাম সময়, স্বপ্নের সিঁড়ি সমাজকল্যাণ সংগঠনের সভাপতি উম্মে সালমা, স্বাধীন বাংলাদেশ জনতা পরিষদের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, শহর ও সভ্যতার বিকাশে নদীর অবদান অপরিসীম। অথচ আজ দেশের প্রায় সব নদী দখল ও দূষণের শিকার। বিশেষ করে ঢাকার চারপাশের নদী—শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু ও বুড়িগঙ্গার অবস্থা ভয়াবহ। দূষণে নদীর পানি কালো, নীল বা লাল হয়ে গেছে, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও মানুষের জীবনে মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্ব রক্ষায় এখনই নদী রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
পদযাত্রা থেকে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়:
১. সিএস রেকর্ড ও ভরা মৌসুমের প্রবাহকে ভিত্তি ধরে নদীর সীমানা নির্ধারণ।
২. সরকারি-বেসরকারি সকল দখলী স্থাপনা উচ্ছেদ বা পুনর্বাসনের মাধ্যমে নদীর জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া।
৩. প্রত্যেক নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খাল ও প্লাবনভূমি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ।
৪. হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে পুনর্গঠন করে নদী-বিল-হাওর-জলাশয়ের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান।
৫. নদী দখল-দূষণের সাথে জড়িতদের নির্বাচন অযোগ্য ঘোষণা।
৬. নদী দখল বা দূষণকারীদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা না দেওয়ার বিধান।
৭. নদী, খাল ও জলাশয় দূষণকারীদের উপযুক্ত জরিমানার আওতায় আনা।
বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, নদী রক্ষা না করলে বাংলাদেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চরম সংকটে পড়বে। তাই এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।